৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকা, রুটিন, রেসিপি, খাওয়ানোর নিয়ম ও সতর্কতা।
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকা, রুটিন, রেসিপি খাওয়ানোর নিয়ম ও সতর্কতা বিষয়ে আজকে আপনাদের জানাবো। আমরা সবাই জানি, ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হয়। কিন্তু, এরপর শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার বা শক্ত খাবার খাওয়াতে হয়। আর ঠিক এই সময়, ৬ মাসের শিশুকে কি কি খাওয়াবেন, কি খাওয়াবেন না, খাওয়ানোর সঠিক সময় ও খাওয়ানোর নিয়ম নিয়ে মায়েরা দুশ্চিন্তায় পরেন। অনেক মায়েরা, ৬ মাসের আগেই, ৫ মাসের শিশুর খাবার তালিকা খুঁজে থাকেন। আজকে আমরা এ বিষয়ে সকল তথ্য আপনাদের জানাবো।
অনেক মায়েরা, ৬ মাসের শিশুকে ভুল খাবার, ভুল নিয়মে খাওয়ানোর কারনে, শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবারে এলার্জিসহ নানা রোগ তৈরী করেন। যার ফলে, শিশু আর খেতে চায় না, শিশুর পরবর্তী বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় এবং শিশু রুগ্ন হয়। এর আরেকটি অন্যতম কারণ, শিশুকে পুষ্টিকর খাবার না দেওয়া। আপনার ৬ মাসের শিশুর বাড়তি খাবার কি পুষ্টিকর?
কিছু সংখ্যক মায়েরা, ৬ মাসের শিশুর সঠিক পুষ্টিকর খাবার তালিকা অনুযায়ী, সঠিক নিয়মে খাবার খাওয়ান। যার ফলে, শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটার সাথে সাথে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এবং শিশুর শারীরিক বিকাশ ও ব্রেইন ডেভলপ সঠিক ভাবে হয়। তাই, আজকে আমরা ৬ মাসের বাচ্চাকে কি কি খাওয়ানো উচিত, ছয় মাসের শিশুর খাবারের রেসিপি, রুটিন ও খাওয়ানোর নিয়ম বিষয়ে আপনাদের জানাবো।
আজকে যা জানাবো
- ৬ মাসের শিশুর কেন পুষ্টিকর বাড়তি খাবার প্রয়োজন?
- ৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকা ও রেসিপি
- ৬ মাসের শিশুর খাবারের রুটিন
- ৬ মাসের শিশুকে খাওয়ানোর নিয়ম ও সতর্কতা
৬ মাসের শিশুকে কেন বাড়তি খাবার খাওয়াবেন?
৬ মাস পর শিশুর শরীরের বৃদ্ধি ও ব্রেইনের বিকাশের জন্য বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার প্রয়োজন হয়। এছাড়া, শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হয়। বয়স অনুযায়ী শিশুর খাবার তালিকা পুষ্টিকর হলে, শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ হয়। ফলে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ দ্রুত ঘটে। তাই ৬ মাস থেকে ১২ মাসের শিশুর খাবার তালিকা অবশ্যই পুষ্টিকর হওয়া উচিত।
এছাড়া, পুষ্টিকর বাড়তি খাবার, শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শিশুর রোগ কম হয়। অন্যদিকে, শিশুর বাড়তি খাবার পুষ্টিকর না হলে, শিশুর রোগ-বালাই বেশি হয়, শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও ব্রেইন ডেভলপ সঠিক ভাবে হয় না এবং শিশু রুগ্ন থাকে। এসব কারণে ৬ মাস থেকে ১ বছরের শিশুর খাবার তালিকা পুষ্টিকর হওয়া জরুরি।
আরও পড়ুন
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকা ও রেসিপি
৬ মাস বয়স থেকে আপনার বাচ্চাকে যেসব পুষ্টিকর খাবার খাওয়াবেন, সেগুলোর একটি সঠিক তালিকা নিচে দেয়া হলো। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, ৬ মাসের শিশুকে যেকোন খাবার প্রথমবার খাওয়ানোর সময়, সামন্য পরিমাণে দিতে হবে এবং পরের দুই-তিন দিন তার পায়খানার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সব স্বাভাবিক থাকলে খাবারটি রুটিনে নিয়মিত রাখবেন। আর স্বাভাবিক না থাকলে, খাবারটি কিছু দিন বন্ধ রাখবেন। তবে আপনারা যারা ৫ মাসের শিশুর খাবার তালিকা চান, তাদের জন্য পরামর্শ হলো, খাবার গুলো ৬ মাস থেকে শুরু করুন।
১। নরম ভাত ও সেদ্ধ আলু
অনেক পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিয়েছেন, ৬ মাসের শিশুকে প্রথমেই শর্করা জাতীয় খাবার দিয়ে শুরু করা ভালো। আর এর জন্য সবচেয়ে ভালো হলো নরম চটকানো ভাত এবং সেদ্ধ আলু চটকানো। এগুলো শিশুর শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পুষ্টির চাহিদা মেটায়। তবে, অবশ্যই প্রথমে পরিমাণে কম খাওয়াবেন। ছয় মাসের শিশুর খাবারের রেসিপি হিসেবে নরম ভাত ও সেদ্ধ আলু তৈরি করাও সহজ।
২। ফলের পিউরি
৬ মাসের শিশুর প্রয়োজনীয় ভিটামিন পাওয়ার জন্য, খাবার তালিকায় ফলের পিউরি রাখতে পারেন। এজন্য আপেল, আঙ্গুর, কলা, পেপে, বেদনা ও নাশপতি পিউরি করে খাওয়াতে পারেন। পাটায় পিশে বা ব্লেন্ড করে, যেভাবেই পিউরি করেন না কেন, খেয়াল রাখবেন ফল যেন শক্ত না থাকে।
৩। শাক-সবজি খিচুরী
৬ মাসের শিশুর বাড়তি খাবার তালিকায় শাক- সবজির খিচুরী, প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। আমরা সবাই জানি, শাক-সবজিতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে । তাই শিশুকে বিভিন্ন ধরনের শাক, আলু, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, কাচাকলা দিয়ে খিচুড়ি তৈরি করে খাওয়াতে পারেন।
প্রথমে শাক-সবজি ভালো করে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর সেদ্ধ শাক- সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করবেন। ছয় মাসের শিশুর খাবারের রেসিপি হিসেবে, খিচুড়িতে অল্প তেল দিবেন এবং কোন মরিচ দেবেন না। খেয়াল রাখবেন খিচুড়ি যাতে নরম হয়।
৪। সেদ্ধ মাছ
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় মাছ রাখতে পারেন। কারন মাছে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। ৬ মাসের শিশুকে মাছ খাওয়ানোর জন্য, ভালো করে মাছ সেদ্ধ করে নিবেন। এরপর ভালোভাবে কাটা ছাড়িয়ে খিচুড়িতে অথবা অল্প তেলে ভেজে খাওয়াতে পারেন। খাওয়ানোর আগে ভালভাবে চটকে নিবেন।
৫। ডিমের সাদা অংশ
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় রাখা যায় এমন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হলো ডিম। তবে, ৬ মাসের শিশুকে ডিমের কুসুম খাওয়ানো ঠিক না। ৬ মাসের শিশুর খাবার রেসিপি হিসেবে, ডিমের কুসুম অলাদা করে শুধু সাদা অংশ বিভিন্ন ভাবে খাওয়াতে পারেন। সাদা অংশ দিয়ে ডিমের পুটিং নরম করে খাওয়াতে পারেন।
৬। চালের সুজি
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় ভাতের বিকল্প শর্করা হিসেবে চালের সুজি ও পায়েস খাওয়াতে পারবেন। চালের সুজিতে শিশু প্রয়োজনীয় শক্তি পায়। তবে ৬ মাসের শিশুর খাবার রেসিপি হিসেবে, সুজি নরম করে রান্না করতে হবে এবং সুজিতে দুধ দেয়া গেলেও, চিনি দেওয়া ঠিক না।
৭। আলু সেদ্ধ ও বাদাম
ছয় মাসের শিশুর খাবার তালিকায় রাখতে পারেন সেদ্ধ আলু ও বাদাম। বাদামে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। তাই বাদাম খাওয়ানোর জন্য, প্রথমে বাদাম ভালোভাবে গুড়ো করে নিবেন৷ এরপর সেদ্ধ আলুর সাথে মিশিয়ে ভালোভাবে চটকে নিবেন। এভাবে অল্প পরিমাণে বাদম ও আলু খেলে আপনার শিশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে।
৮। দুধ
৬ মাসের শিশুর দরকারী ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করে দুধ। তবে এসময় বুকের দুধে শিশুর এই চাহিদা পূরন হয় না। আবার, ৬/৭ পর অনেক মায়েদের বুকের দুধ কমে যেতে পারে। তাই, বুকের দুধের পাশাপাশি ৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় বসয় উপযোগী ভালো মানের গুড়ো দুধ খাওয়াতে হবে। এতে শিশুর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল এর চাহিদা পূরন হবে। তবে, ১ বছরের আগে শিশুকে গরুর দুধ খাওয়াবেন না।
৯। মাংস বাটা
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় মাংস রাখতে পারেন। কারন, মাংসে রয়েছে শিশুর শরীর বৃদ্ধি ও বিকাশের প্রয়োজনীয় পুষ্টি। ছয় মাসের শিশুর খাবার রেসিপি হিসেবে, কচি মুরগী বা কবুতর এর মাংস বেটে, খিচুরির সাথে বা আলাদা ভাবে হালকা তেলে রান্না করে খাওয়াতে পারেন। খেয়াল রাখবেন মাংস যেন নরম হয়।
১০। ডালের ও সবজির স্যুপ
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় সবজির স্যুপ আরেকটি ভালো পুষ্টিকর খাবার। আপনারা ডাল দিয়ে শিশুকে স্যুপ তৈরী করে খাওয়াতে পারেন। এছাড়া ৬ মাসের শিশুর খাবার রেসিপিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন- গাজর, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, আলু সহ নানা সবজি সেদ্ধ করে, সবজির স্যুপ তৈরি করে খাওয়াতে পারেন। ডাল ও সবজির স্যুপ খেলে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পুরন হবে। এছাড়া স্যুপ খেলে মিনারেল এর চাহিদা পূরন হবে।
১১। চটকানো কলা
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় সবচেয়ে সহজে যে খাবারটি খাওয়ানো যায়, সেটি হলো পাকা কলা। এটি যেমন সহজে পাওয়া যায় তেমনি সহজে চটকিয়ে শিশুকে খাওয়ানো যায়। আর কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজমে সাহায্য করে কলা। এছাড়া প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া যায়। তাই আপনার বাচ্চার ৬ মাস হলে তাকে চটকানো কলা খাওয়ান।
১২। পাকা পেপে
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় রাখা যায়, এমন অরেকটি ফল হলো পাকা পেপে। পাকা পেপে তে আছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। এটিও কলার মতো সহজে শিশুকে খাওয়ানো যায়। চটকানো পাকা পেপে শিশুকে খাওয়ালে, শিশু পাকা পেপেতে থাকা পুষ্টিগুন পাবে।
১৩। ফলের রস
৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকায়, ফল খাওয়ার নিয়ম হিসেবে আমরা এর আগে কলা ও পেপে চটকিয়ে খাওয়ানো এবং ফলের পিউরি খাওয়ানোর কথা বলেছি। কিন্ত, আপনারা শিশুকে ফলের রসও খাওয়াতে পারেন। এজন্য, ফল ব্লেন্ড করে, রস বের করে নিবেন। এবং চামচ দিয়ে শিশুকে খাওয়াবেন। এতে ফলে থাকা সকল পুষ্টি উপাদান শিশু পাবে।
১৪। বিশুদ্ধ পানি
সকল খাবারের পাশাপাশি শিশুকে বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে ভুলে যাবেন না। তবে, ফল খাওয়ানোর ৩০ মিনিট পরে পানি খাওয়ানো উচিত। কারন পানি ৬ মাসের শিশু থেকে বুড়ো মানুষ পর্যন্ত এক অপরিহার্য উপাদান। তবে, অবশ্য বিশুদ্ধ পানি খাওয়াবেন এবং পরিষ্কার পাত্রে পানি খাওয়াবেন।
আরও পড়ুন
৬ মাসের শিশুর খাবার রুটিন
৬ মাসের শিশুকে রুটিন করে কমপক্ষে ৫ বার খাবার দিতে হবে। তবে, শরীরের চাহিদ অনুযায়ী এটা আরো বেশি হতে পার। এছাড়, বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই হার বাড়বে। এভাবে শিশুর বয়স ১ বছর হলে ৮-৯ বার খাবার খাওয়াতে হবে। নিচে ৬ মাসের শিশুর খাবারের রুটিন দেয়া হলো।
সকালের নাস্তা, ৮ টা - ৯ টা
এই সময় শিশুকে একবার বাড়তি খাবার খাওয়াবেন। এ সময় ফল জাতীয় বা সবজী জাতীয় খাবার খাওয়াতে পারেন। এছাড়া, চালের সুজি বা পায়েসও এই সময় খাওয়াতে পারেন।
সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা
এসময় ৬ মাসের শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন। এছাড়া, বুকের দুধের পাশাপাশি এসময় ফর্মুলা দুধ খাওয়াতে পারেন।
দুপুরের খাবার, ১ টা - ২ টা
৬ মাসের শিশুর দুপুরের খাবারে ভারী খাবার রাখতে পারেন। এসময় শিশুকে ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, আলু, সবজী বা খিচুরী থেকে যেকোন এক/দুই আইটেম খাওয়াতে পারেন।
বিকাল ৫ টা - ৬ টা
৬ মাসের শিশুর বিকেলর খাবারে আবার শিশুকে বুকের দুধ বা ফর্মুলা দুধ খাওয়াতে পারেন।
রাতের খাবার, ৮ টা থেকে ৯ টা
৬ মাসের শিশুর রাতের খাবার আবার বাড়তি খাবার খাওয়াবেন। এসময় ভাত, মাছ, আলু, সুজি, পায়েস, স্যুপ, ডিম, ফল ও শাক- সবজি, জাতীয় খাবার থেকে ২/১ আইটেম খাওয়াতে পারেন।
আরও পড়ুন
৬ মাসের শিশুকে খাওয়ানোর নিয়ম ও সতর্কতা
উপরে আমরা ৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকা, রেসিপি এবং রুটিন আপনাদেরকে জানালাম। এই খাবারগুলো ৬ মাসের শিশুর বয়স উপযোগী পুষ্টিকর খাবার। এখন আমরা ৬ মাসের শিশুকে খাওয়ানোর নিয়ম এবং ৬ মাসের শিশুকে খাওয়ানোর কিছু সতর্কতা আপনাদের জানাবো।
১। অল্প খাবার দিয়ে শুরু করুন
শিশুকে অল্প খাবার দিয়ে খাওয়ানো শুরু করবেন। এজন্য ১ চামচ দিয়ে শুরু করা উচিত। পরে ৪-৫ চামচ পর্যন্ত বাড়াতে পারেন।
২। শক্ত খাবার খাওয়াবেন না
৬ মাসের শিশুকে কোন শক্ত খাবার খাওয়াবেন না। সকল খাবার নরম করে খাওয়াবেন।
৩। শিশুকে জোর করে খাওয়াবেন না
৬ মাসের শিশুকে জোর করে খাওয়াবেন না। শিশু খেতে না চাইলে, খাবার বন্ধ করে দিন। পরে আবার চেষ্টা করুন। এটা শুধু ৬ মাসের শিশুর জন্য নয়, সকল শিশুর জন্য প্রযোজ্য।
৪। শিশুকে বসিয়ে খাওয়াবেন
শিশুকে শুইয়ে বা কোলে নিয়ে খাওয়াবেন না। ৬ মাসের শিশুকে চেয়ারে বা বিছানায় হেলান দিয়ে বসিয়ে খাওয়াবেন।
৫। গরুর দুধ খাওয়াবেন না
৬ মাসের শিশুকে গরুর দুধ খাওয়াবেন না। কারন, ১ বছরের আগে গরুর দুধ খাওয়ালে শিশু হজম করতে পারে না।তাই গরুর দুধ ১ বছর বয়সে শুরু করুন।
৬। শিশুকে চিনি ও লবন খাওয়াবেন না
৬ মাসের শিশুকে চিনি ও লবন খাওয়াবেন না। ১ বছর বয়স থেকে চিনি ও লবন খাওয়াতে পারেন।
৭। থালা-বাসন ও হাত জীবানুমুক্ত করে খাওয়াবেন
শিশুকে খাওয়ানোর আগে অবশ্যই থালা-বাসন জীবাণু মুক্ত করে খাওয়াবেন। এছাড়া, হাত দিয়ে খাবার খাওয়ালে, ভালো ভাবে হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিবেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে শিশুর পেটের সমস্যা হবে না।
৮। ফ্রিজের খাবার খাওয়াবেন না
শিশুকে ফ্রিজের খাবার খাওয়াবেন না। এতে শিশুর ঠান্ডার সমস্যা বা পেটের সমস্যা হতে পরে।
৯। শিশুর মলের দিকে খেয়াল রাখুন
যে কোন খাবার নতুন খাওয়ানোর পর, শিশুর মলের দিকে লক্ষ্য রাখুন। শিশুর পায়খানা শক্ত হলে বা পায়খানা করতে সমস্যা হলে খাবারটি বন্ধ করে দিন।
১০। শিশুর ঢেকুর ও বমির দিকে লক্ষ্য রাখুন
৬ মাসের শিশুকে খাওয়ানোর সময় বা খাওয়ানোর পরে শিশুর ঢেকুর ও বমির দিকে লক্ষ্য রাখুন। অতিরিক্ত ঢেকুর ও বমি হলে, খাবার খাওয়ানো বন্ধ করে দিন।
১১। শিশুর খাবারে এলার্জির দিকে লক্ষ্য রাখুন
৬ মাসের শিশুর কিছু খাবারে এলার্জি হতে পারে। এজন্য প্রতিটি খাবার প্রথম বার খাওয়ানোর পর তিন দিন অপেক্ষা করে দেখুন, শিশুর কোন এলার্জির সমস্যা হয় কিনা। এলার্জির সমস্যা দেখা দিলে, খাবারটি কিছু দিনের জন্য বিরত রাখুন।
১২। প্লাস্টিকের পাত্রে খাওয়াবেন না
শিশুকে প্লাস্টিকের পাত্রে খাওয়াবেন না। সবচেয়ে ভালো স্টিলের পাত্রে খাওয়ানো। এগুলো সহজে জীবানু মুক্ত করা যায়।
১৩। ঘরে তৈরী খাবার খাওয়াবেন
শিশুকে সব সময় ঘরে তৈরী খাবার খাওয়ানো ভালো। ৬ মাসের শিশুকে তো অবশ্যই বাইরের খাবার খাওয়ানো উচিত না।
আরও পড়ুনআমাদের শেষ কথা
আজকে আমরা আপনাদের জানালাম, ৬ মাসের শিশুর খাবার তালিকা ও । এছাড়া, ৬ মাসের শিশুর খাবার রুটিন ও কিছু রেসিপি সম্পর্কে জানিয়েছি। আপনারা Google ও YouTube এ ৫ মাসের শিশুর খাবার তালিকা থেকে অনেক খাবার তালিকা পাবেন। তবে খেয়াল করে দেখবেন খাবার গুলো পুষ্টিকর কিনা!
আমরা আপনাদের ৬ মাসের শিশুর যে খাবার তালিকটা দিয়েছে এবং ছয় মাসের শিশুর খাবারের রেসিপি যেভাবে তৈরি করতে বলেছি, এগুলো সব পুষ্টিকর খাবার। আপনারা, ১ বছরের শিশুর খাবার তালিকা হিসেবেও এটি ব্যবহার করতে পারবেন। শুধু খাবার পরিমাণে বাড়ালেই হবে। আশা করি, উপরোক্ত তালিকা থেকে শিশুকে খাবার খাওয়ালে, আপনার শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে। তবে অবশ্যই ৬ মাসের শিশুকে খাওয়ানোর নিয়ম অনুযায়ী খাবার খাওয়াবেন এবং সতর্কতা গুলো লক্ষ্য রাখবেন।