প্যাসিভ ইনকাম কী? সেরা ১১ টি প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া। passive income idea
আজকে আমারা আপনাদের সাথে আলোচনা করবো প্যাসিভ ইনকাম কী? এবং পেসিভ ইনকাম এর সেরা আইডিয়া গুলো নিয়ে। এগুলো মূলত স্মার্ট স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া বা ইনকাম সোর্স । অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম এর আইডিয়া গুলো নারীদের ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ করে দেয়।
এছাড়াও পেসিভ ইনকাম এর মধ্যে রয়েছে পার্ট টাইম ব্যবসা আইডিয়া। বর্তমানে অনেক মানুষের একটি ইনকাম সোর্স দিয়ে খরচ চালানো প্রায় অসম্বব। তাই প্যাসিভ ইনকাম হতে পারে আপনার বাড়তি আয়ের একটি উপায়।
প্যাসিভ ইনকাম এর ধারণা নতুন নয়। কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এ সম্পর্কে সামান্যই জানে। যাইহোক, আমরা অনেকেই ইতিমধ্যে প্যাসিভ ইনকাম এর নানা উপায় বা আইডিয়া সমূহ না জেনেও ব্যবহার করছি। আসুন প্যাসিভ ইনকাম এর কৌশল এবং কীভাবে আরও ইনকাম সোর্স বাড়াতে পেসিভ ইনকাম কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা যাক।
প্যাসিভ ইনকাম (passive income) কী?
আপনি যদি কোন কষ্ট ছাড়াই টাকা ইনকাম করতে পারেন, তাহলে কি এটা ভাল নয়! আপনি যখন ঘুমাচ্ছেন তখনও প্রতি সেকেন্ডে আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা আসা কি আশ্চর্যজনক নয়?
প্যাসিভ ইনকাম হল কাজে সরাসরি জড়িত না হয়ে আপনার পণ্য, পরিষেবা বা আইডিয়া বিক্রি করে বা ভাড়া দিয়ে টাকা ইনকামের একটি কৌশল।
এখন অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এর একটি কারণ হল এটি কাজ করার স্বাধীনতা দেয়। এটি একটি স্বাধীন ইনকাম সোর্স।
প্যাসিভ ইনকাম এর মাধ্যমে আপনি ঘুমানোর সময়ও অর্থ উপার্জনের করতে পারেন। প্যাসিভ ইনকাম এর অনলাইন ইনকাম সোর্স ব্যবহার করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্যাসিভ ইনকাম মহিলাদের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দেয়।
সেরা ১১ টি প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea)
যদিও প্যাসিভ আয়ের ধারণাটি বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত, বাংলাদেশেও দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। কারণ এটা একটি স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া। চলুন তাহলে দেখে নেই প্যাসিভ ইনকাম কিভাবে করা যায়।
১। ব্লগিং (Blogging)
নতুনদের জন্য, ব্লগিং (Blogging) হল অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম শুরু করার সেরা কৌশল। যা অনলাইন বিজনেস আইডিয়া গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ। শুরুতে, আপনাকে একটু কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, একটু বেশি সময় ধরে কাজ করতে হবে, কিন্তু ব্লগিং (Blogging) সময়ের প্রবাহের সাথে আরও আরামদায়ক হবে।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), সোশ্যাল মিডিয়া অপ্টিমাইজেশন এবং বুস্টিং ইত্যাদির মতো বিষয়গুলো জেনে আরও ভাল ব্লগার হওয়ার জন্য কিছু আইটি জ্ঞানের প্রয়োজন হয়। অবশেষে আপনি জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন এবং প্রতি সেকেন্ডে আয় করবেন। নারীদের ঘরে বসে কাজ করার জন্য ব্লগিং হতে পারে একটি অনলাইন ইনকাম সোর্স।
২। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
ঘরে বসে আয় করার একটি সেরা উপায় হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং । আপনার যদি একটি ব্লগ, ওয়েবসাইট বা এমনকি কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থাকে, আপনি বিভিন্ন পণ্য বা পরিষেবার সাথে কিছু অ্যাফিলিয়েট লিংক অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন এবং প্রতিবার কেউ আপনার রেফারেলের ভিত্তিতে কেনাকাটা করলে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea) গুলোর মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) হতে পারে আরেকটি স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া। কারণ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) একটি জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea)।
৩। ইউটিউব (YouTuve) চ্যানেল
ইউটিউব ২০১৮ সালে আনুমানিক ৪ বিলিয়ন ডলার বিজ্ঞাপনে আয় করেছে। তাই প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea) হিসেবে আপনি এই প্ল্যাটফর্মে ভিডিও আপলোড করে এবং তারপর সেখানে, বিজ্ঞাপন দেখিয়ে একটি সম্ভাব্য বড় ডলার উপার্জন করতে পারেন। ইউটিউব (YouTuve) চ্যানেল করে অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম করা একটি জনপ্রিয় আইডিয়া।
এজন্য আপনার সরাসরি গ্রাহকদের একটি নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু ভালো মানের ভিডিও আপলোড করতে হবে। যা পরবর্তীতে তৈরি করবে আপনার অনলাইন ইনকাম সোর্স। ইউটিউব চ্যানেল কিভাবে বানাবেন জানতে চাইলে এই লিংকে দেখুন।
৪। ফেসবুক পেজ (Facebook Page) মনিটাইজেশন
আপনি ইউটিউবের মত ফেসবুক পেজ মনিটাইজ করেও আয় করতে পারেন। আপনি যদি ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করতে পারেন এবং পোস্ট লিখতে পারেন এবং ফেসবুকের সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে পারেন , তাহলে আপনি ফেসবুকের মাধ্যমেও প্রচুর আয় করতে পারেন।
আর ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি। আপনি সহজেই আপনার দর্শক পেতে পারেন, তাই আপনার ফেসবুক পেজ (Facebook Page) প্যাসিভ ইনকাম (passive income) এর একটি ভাল উৎস হতে পারে। এখান থেকে, আপনি অ্যাডসেন্স বা স্পনসরশিপের মাধ্যমে এবং অ্যাফিলিয়েট পণ্য বিক্রির মাধ্যমেও ইনকাম সোর্স তৈরি করতে পারেন।
৫। ছবি বিক্রি
আপনি যদি একজন ভাল ফটোগ্রাফার হন, তাহলে আপনি আপনার ছবি বিক্রি করে ইনকাম সোর্স তৈরি করতে পারেন। আপনি কি জানেন? মানুষ বেশিরভাগ জনপ্রিয় স্টক ফটো ওয়েবসাইট থেকে প্রাসঙ্গিক ছবি কিনে।
তাই আর অপেক্ষা করবেন না, আপনার ওয়েবসাইট খুলুন এবং ওয়েবসাইটে উচ্চমানের ছবি আপলোড করুন এবং অনলাইন মার্কেটিং শুরু করুন। ছবি বিক্রি হতে পারে আপনার জন্য সেরা পেসিভ ইনকাম সোর্স।
৬। অনলাইন কোর্স
অনলাইন ব্যবসার একটি জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea) হচ্ছে অনলাইন কোর্স। আপনার লুকানো প্রতিভা কি? আপনি কি শিল্পী, গায়ক, সুরকার? আপনি কি গণিত বা প্রোগ্রামিংয়ে ভাল? যাই হোক না কেন, ইন্টারনেট হল আপনার প্রতিভা ছড়িয়ে দেওয়ার এবং এটি থেকে ইনকাম সোর্স ও জনপ্রিয়তা অর্জনের সর্বোত্তম উপায়।
তাই, প্রোগ্রামিং, গণিত, ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, সঙ্গীত বা যে বিষয়ে আপনি পারদর্শী সে বিষয়ে কিছু কোর্স তৈরি করুন। এটি, আপনার ওয়েবসাইট বা অন্যান্য ই-লার্নিং ওয়েবসাইটে বা এমনকি ইউটিউবে আপলোড করুন। আপনি অল্প সময়ের মধ্যে লাভ পাবেন। নারীদের ঘরে বসে কাজ করার জন্য অনলাইন ব্যবসার একটি জনপ্রিয় স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া হচ্ছে এই অনলাইন কোর্স বিক্রি করা।
৭। ওয়েবসাইট উন্নয়ন (Website Development)
আপনি যদি ওয়েবসাইট ডেভেলপার হন, আপনি কিছু কোম্পানির জন্য একটি ওয়েবসাইট ডেভেলপ করে আয় করতে পারেন। বাংলাদেশে প্রচুর ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, এবং কিছু পুরনো কোম্পানি আছে যাদের ওয়েবসাইট নেই। কিন্তু প্রতিটি কোম্পানি স্মার্ট ব্যবসায় যোগ হয়ে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ওয়েবসাইটের প্রয়োজন তাই সবার।
তাই, ওয়েবসাইট ডেভেলপার এর কাজ শিখে ঘরে বসে অনলাইন বা অফলাইন থেকে একটি চুক্তি পান। কাজ শুরু করুন এবং আজই স্ব-ব্র্যান্ডিং শুরু করুন। যারা স্টুডেন্ট তাদের জন্য এটি হতে পারে সবচেয়ে ভালো ইনকাম সোর্স। তবে এটি শিখতে কমপক্ষে ১ বছর সময় দিতে হবে। YouTuve খুঁজলে অনেক ওয়েবসাইট উন্নয়ন (Website Development) কোর্স খুঁজে পাবেন।
৮। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারের জন্য সফটওয়্যার আজকাল সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আপনি যদি একটি মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপ করে প্লে স্টোরে আপলোড করেন, তাহলে আপনি আপনার সফটওয়্যারের প্রতিটি ডাউনলোড থেকে রাজস্ব পাবেন।
আপনি আপনার অ্যাপে দেখানো বিজ্ঞাপন থেকেও অর্থ উপার্জন করতে পারেন। কম্পিউটার সফটওয়্যারের ক্ষেত্রেও তাই। এটি একটি স্মার্ট বিজনেস আইডিয়া, তবে এজন্য সফটওয়্যার বানানো জানতে হবে।
৯। রিয়েল এস্টেট
বাংলাদেশে আজকাল রিয়েল এস্টেট ব্যবসা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea) টি দ্বারা, আপনি কয়েক দিনের মধ্যে ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেন। এজন্য কিছু প্রয়োজনীয়তা হলো, শুরুতে একটি মূলধন থাকতে হবে এবং আপনার জমির গুণমান সম্পর্কে বিস্তৃত জ্ঞান থাকতে হবে। জমি কেনার ব্যাপারে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
যাতে, আপনি পরবর্তীতে প্রচুর মুনাফা দিয়ে বিক্রি করতে পারেন। এটিকে পার্ট টাইম ব্যবসা বা প্যাসিভ ইনকাম (passive income) হিসেবে না নিয়ে অনেকে ফুল টাইম কাজ হিসেবে নেয়। কারণ এতে লাভের পরিমাণ অনেক বেশি।
১০। সম্পত্তি ভাড়া
এটি বাংলাদেশের আরেকটি জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea)। শহরের লোকেরা তাদের বাড়ি এবং সম্পত্তি ভাড়া দেয় এবং কষ্ট ছাড়াই সহজ অর্থ উপার্জন করে।
আপনি পার্টি এবং প্রোগ্রামের জন্য, থাকার জায়গা, পার্কিং স্পেস এবং স্থান ভাড়া দিতে পারেন। এজন্য আপনার একটি ভাড়া দেয়ার মত জায়গা বা বাসা থাকতে হবে। এটি একটি লাভজনক প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea)।
১১। যানবাহন ভাড়া
উবার, পাঠাও, সহজ ইত্যাদির মতো অনলাইন রাইড-শেয়ারিং কোম্পানিগুলির জন্য গত কয়েক বছর ধরে গাড়ি, মোটরবাইক ভাড়া দেওয়া খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, এমনকি আপনার গাড়িতে চড়েও সহজে টাকা উপার্জন করা যায়। আপনার যদি ট্রাক বা লরি থাকে তবে আপনি আপনার প্যাসিভ ইনকাম (passive income) এর জন্য সেগুলিও ভাড়া দিতে পারেন।
আমাদের শেষ কথা
আজকে আমরা আপনাদেরকে জানালাম, কতগুলো বিজনেস আইডিয়া। যার মধ্যে প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea) বা ঘরে বসে আয় করার কিছু স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া। আবার কিছু নারীদের ঘরে বসে কাজ যা জনপ্রিয় অনলাইন ইনকাম সোর্স।
প্যাসিভ ইনকাম কিভাবে করা যায় বা প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া (passive income idea) সম্পর্কে আপনারা আরো কিছু জানতে চাইলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।