কোন পিল সবচেয়ে ভালো। পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম।

কোন পিল সবচেয়ে ভালো তা আজকে আপনাদেরকে জানাবো। এছাড়াও থাকবে পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং পিল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। এছাড়াও লাল পিল ও সাদা পিল খেলে কি হয়। লাল পিল খাওয়ার নিয়ম ও মাসিকের সময় পিল খেলে কি হয় এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

সবচেয়ে ভালো পিল

বাংলাদেশ সহ বহু দেশে জনপ্রিয় একটি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হচ্ছে জন্মবিরতিকরণ পিল। যা মহিলাদের খাবার ট্যাবলেট বা বড়ি। এই পিল গুলোতে এক পাতায় ২১ টি অথবা ২৮ টি ট্যবলেট থাকে। মেয়েদের মাসিক চক্র যেহেতু ২৮ দিনের। তাই মেয়েরা নিয়মিত এই স্বল্পমাত্রার পিল বা বড়ি খেলে সহবাস করলেও গর্ভধারণ হয় না।

এছাড়া, নিয়মিত জন্মবিরতিকরণ পিল খেলে, মেয়েদের মাসিকের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। তাই, অনেক চিকিৎসকরা অবিবাহিত মেয়েদের মাসিকের সমস্যা সহ বিভিন্ন হরমোনের সমস্যা দূর করার জন্য পিল খাওয়ার প্রেসক্রাইব করেন।

তবে, অবশ্যই পিল খাওয়ার আগে জেনে নিতে হবে, কোন পিল সবচেয়ে ভালো ও পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম। কারণ, পিল খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে এবং এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে।

আজকে যা জানাবোঃ

  • কোন পিল সবচেয়ে ভালো
  • ইমারজেন্সি পিল (Emergency Pill) কি?
  • পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম 
  • ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম
  • ২৮ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম
  • লাল পিল খেলে কি হয়
  • লাল পিল খাওয়ার নিয়ম
  • পিল খেতে ভুলে গেলে করণীয়
  • পিল খাওয়ার উপকারিতা
  • পিল খাওয়ার অপকারিতা

কোন পিল সবচেয়ে ভালো (Best Birth Control Pill In Bangladesh) 

কোন পিল সবচেয়ে ভালো, সেটা নির্ভর করবে আপনার শরীরে কোন পিল মানাবে তার উপর। একেক জন মেয়েদের শরীরের হরমোন একেক রকম থাকে। তাই, একেক জনের শরীরে এক এক ধরনের পিল মানায় বা সেট হয়।

আপনার শরীরের যে পিলটি মানাবে সেটি আপনার জন্য ভালো পিল। আপনার শরীরে কোন পিল না মানালে সেটি পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি পিল ব্যবহার করতে পারেন। আজকে আমরা বাংলাদেশে পাওয়া যায়, এমন ভালো মানের কিছু পিলের নাম আপনাদেরকে জানাবো।

এর মধ্যে সবগুলো পিল ভালো মানের পিল। কিছু ভালো মানের স্বল্পমাত্রার স্বাভাবিক পিল আবার কিছু ভালো মানের হাই কোয়ালিটি থার্ড জেনারেশন পিল। থার্ড জেনারেশন পিল গুলো গর্ভধারণ রোধের পাশাপাশি মেয়েদের মাসিকের সমস্যা সহ মেয়েদের বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চলুন তাহলে পিল গুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

প্রথমেই দেখে নেই ভালো মানের স্বল্পমাত্রার স্বাভাবিক পিল গুলো। 

১। সুখী পিল (Sukhi Pill)

সুখী পিল বা বড়ি একটি ভালো মানের স্বল্প মাত্রার জন্মবিরতিকরণ পিল। সুখী পিল বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তৈরিকৃত একটি পিল। এই পিলটি খোলা বাজারে বিক্রি করার জন্য নয়। বহু বছর ধরে এটি বাংলাদেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

২। ফেমিকন পিল (Femicon Pill)

বাংলাদেশের খুবই জনপ্রিয়, একটি স্বল্প মাত্রার স্বাভাবিক জন্মবিরতিকরণ পিল হচ্ছে ফেমিকন পিল। নিকটস্থ ফার্মেসিতেই ফেমিকন পিল (Femicon Pill) পাওয়া যায়। এটি প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশের সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (SMC)।

ফেমিকন ট্যাবলেট (Femicon Tablet) যদি আপনার শরীরের মানায়, তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে ফেমিকন ট্যাবলেট (Femicon Tablet) ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুবই কম। তবে অবশ্যই ফেমিকন পিল (Femicon Pill) খাওয়ার নিয়ম জেনে এটি সেবন করবেন।


৩। ফেমিপিল (Femipil)

এস এম সি (SMC) কোম্পানির আরেকটি ভালো মানের স্বল্প মাত্রার জন্মবিরতিকরণ পিল হচ্ছে ফেমিপিল (Femipil)। এই পিলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুবই কম। তাই বলা যায় বাংলাদেশের বাজারে ফেমিপিল (Femipil) আরেকটি ভালো মানের পিল।

৪। মিনিকন পিল (Minicon Pill)

মিনিকন পিল (Minicon Pill) আরেকটি ভালো মানের পিল। মিনিকন পিল (Minicon Pill) টি এসএমসি কোম্পানির আরেকটি ভালো মানের পিল। মিনিকন পিল (Minicon Pill) টি বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য খুবই ভালো একটি পিল। যদি এই পিলটি আপনার শরীরের মানায় তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে মিনিকন পিল (Minicon Pill) খাওয়ার নিয়ম মেনে খেতে পারেন।

৫। নরেট ২৮ (Noret 28)

আবারও বলছি, কোন পিল সবচেয়ে ভালো সেটা নির্ভর করে আপনার শরীরে পিল টি মানায় কিনা সেটার উপর। এস এম সি (SMC) কোম্পানির আরেকটি ভালো মানের পিল হচ্ছে নরেট ২৮ (Noret 28)। এই পিলটি যদি আপনার শরীরের সাথে ভালো মানায় তাহলে আপনি নরেট ২৮ (Noret 28) পিলটি নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।

নরেট ২৮ (Noret 28)

এবারে থাকবে হাই কোয়ালিটি থার্ড জেনারেশন কিছু ভালো মানের পিলের নাম।

৬। ওভাস্টাট পিল (Ovostat Pill)

আগেই বলেছি, ভালো মানের হাই কোয়ালিটি থার্ড জেনারেশন পিল গুলো, গর্ভধারণ রোধ করার পাশাপাশি মেয়েদের বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। তাই, মেয়েদের জরায়ু ও হরমোন জনিত সমস্যার কারণে গাইনোকোলজিস্ট চিকিৎসকরা এই হাই কোয়ালিটি থার্ড জেনারেশন পিল গুলো খেতে পরামর্শ দেন।

ওভাস্টাট পিল (Ovostat Pill) তেমনি একটি ভালো মানের পিল। ওভাস্টাট পিল (Ovostat Pill) টি প্রস্তুত করেছে নুভিস্তা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (Nuvista Pharma Limited)। যদি আপনার শরীরের সাথে ওভাস্টাট পিল (Ovostat Pill) মানিয়ে যায় তাহলে আপনি নিরাপদে এই পিলটি ব্যবহার করতে পারেন।

৭। মারভেলন পিল (Marvelon Pill)

নুভিস্তা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (Nuvista Pharma Limited) এর আরেকটি ভালো মানের পিল হচ্ছে মারভেলন পিল (Marvelon Pill)। 

অনেকেই জানতে চান মারভেলন পিল কেমন। যদি আপনার শরীরে মানিয়ে যায় তাহলে আপনি নিরাপদে মারভেলন পিল (Marvelon Pill) টি ব্যবহার করতে পারবেন। এটি গর্ভধারণ রোধ করার পাশাপাশি মেয়েদের পিরিয়ডের নানা সমস্যায় ভালো কাজ করে। তাই আপনি চাইলে মারভেলন পিল (Marvelon Pill) খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন।

মারভেলন পিল (Marvelon Pill)

৮। ডেসোলন পিল (Desolon Pill)

রেনেটা (Renata) কোম্পানির আরেকটি উন্নত মানের পিল হচ্ছে ডেসোলন পিল (Desolon Pill)। আপনার শরীরে যদি ডেসোলন পিল (Desolon Pill) ভালো মানায় তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে এই পিলটি ব্যবহার করতে পারেন।

৯। রোজেন ২৮ (Rosen 28)

ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস (Incepta Pharmaceuticals) এর একটি ভালো মানের পিল হচ্ছে রোজেন ২৮ (Rosen 28)। এই পিলটি আপনার গর্ভধারণ রোধ করার পাশাপাশি মেয়েদের নানা রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। রোজেন ২৮ (Rosen 28) একটি উন্নত মানের হাই কোয়ালিটি পিল। 

যদিও হাই কোয়ালিটি থার্ড জেনারেশন পিলগুলোর দাম স্বাভাবিক পিল গুলোর চেয়ে বেশি। তথাপি, আপনার কাছে কোন পিল সবচেয়ে ভালো? আপনার শরীরে যদি স্বল্পমাত্রার স্বাভাবিক পিল যেমন - ফেমিকন বা মিনিকন মানায়। তাহলে, আপনার ক্ষেত্রে সেটি ভালো পিল। সেক্ষেত্রে, আপনাকে দামি রোজেন ২৮ (Rosen 28) ব্যবহার না করলেও চলবে। আবার, আপনার ক্ষেত্রে যদি রোজেন ২৮ (Rosen 28 বা মারভেলন পিল (Marvelon Pill) ভালো মানায় তাহলে সেটি আপনার ক্ষেত্রে ভালো মানের পিল।

ইমারজেন্সি পিল (Emergency Pill):

২১ দিনের বা ২৮ দিনের মাসিক পিল গুলো ছাড়াও মহিলাদের খাওয়ার আরেক প্রকার পিল রয়েছে। যার নাম ইমারজেন্সি পিল (Emergency Pill) বা জরুরী গর্ভ নিরোধক পিল। এই পিল অরক্ষিত যৌন মিলনের ৩-৫ দিনের মধ্যে খেলে মেয়েরা গর্ভবতী হয় না।

সহবাসে এক্সিডেন্টলি যদি পুরষের বীর্য মেয়েদের যোনিতে ডুকে যায় তাহলে ৩-৫ দিনের মধ্যে ইমারজেন্সি পিল (Emergency Pill) খেতে হয়। তবে, এই পিল মাসে কয়েক বার খাওয়া ঠিক না। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন নামে ইমারজেন্সি পিল (Emergency Pill) পাওয়া যায়। আপনারা চাইলে ইমারজেন্সি পিল (Emergency Pill) খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন।

এখানে আমরা শুধুমাত্র বাংলাদেশে পাওয়া যায়, কোন পিল সবচেয়ে ভালো বা ভালো মানের কিছু পিলের নাম আপনাদেরকে জানালাম। তবে, পিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শে বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শে ব্যবহার করবেন।

পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম

পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম

পিল খাওয়া কিভাবে শুরু করবেন বা পিল খাওয়ার নিয়ম কি! বাংলাদেশে যে সকল স্বল্পমাত্রার পিল পাওয়া যায়, সেগুলোর মধ্যে কিছু পিল ২১ ট্যাবলেট। এগুলো ২১ দিন খেতে হয়। যার মধ্যে ২১ টি সাদা ট্যাবলেট থাকে।

আবার, কিছু পিল ২৮ টি ট্যাবলেটের। যেগুলো ২৮ দিন খেতে হয়। ২৮ টি ট্যাবলেট এর পিলের প্যাকেটে চারটি বা সাতটি লাল বা বাদামী রঙের পিল থাকে। যেগুলো আয়রন ট্যাবলেট, বাকিগুলো সাদা পিল।

২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম

২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম হলো, মেয়েদের মাসিকের প্রথম দিন থেকে পঞ্চম দিনের মধ্যে একটি সাদা ট্যাবলেট দিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে। এছাড়া, আপনি গর্ভবতী না হলে যে কোন সময় পিল খাওয়া শুরু করতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন মাসিকের প্রথম দিন বা দ্বিতীয় দিন শুরু করতে। এভাবে প্রতিদিন একই সময় নিয়মিত পিল গুলো খেতে হবে।

আপনারা অনেকেই জানতে চান, সাদা পিল খেলে কি হয়? মূলত, সাদা পিল গুলো আপনার গর্ভধারণ রোধ করে। এই পিল গুলো খেলে পুরুষের বীর্যে থাকা শুক্রাণু স্ত্রীর জরায়ুতে যেতে পারে না, ফলে স্ত্রী গর্ভবতী হয় না।

২১ টি সাদা পিল খাওয়া শেষ হয়ে গেলে, সাত দিন অপেক্ষা করতে হবে। এই সাত দিনের মধ্যে মেয়েদের মাসিক হয়। ৭ দিন পরে আবার নতুন প্যাকেট শুরু করতে হবে। যদি সাত দিনের মধ্যে মাসিক না হয় এবং আপনি যদি নিশ্চিত থাকেন যে, আপনি গর্ভবতী নন, তাহলে নতুন প্যাকেট শুরু করতে পারেন।

এভাবে আপনি যত দিন বাচ্চা নিতে না চান, তত দিন পিল চালিয়ে যেতে হবে। বাচ্চা নিতে চাইলে পিল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। পিল খাওয়া বন্ধ করার পর আপনি স্বাভাবিক ভাবে গর্ভবতী হতে পারবেন।

২৮ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম

যে সকল পিলের প্যাকেটে ২৮ টি ট্যাবলেট থাকে। সেগুলো, মাসিকের প্রথম দিন থেকে পঞ্চম দিনের মধ্যে সাদা পিল দিয়ে শুরু করতে হয়। তবে চেষ্টা করবেন, মাসিকের প্রথম দুই দিনের মধ্যে পিল খাওয়া শুরু করতে।

এছাড়া, আপনি গর্ভবতী না হলে, যে কোন সময় পিল খাওয়া শুরু করতে পারেন। প্রতিদিন একই সময়ে সাদা পিল গুলো খাবেন। সাদা পিল গুলো শেষ হয়ে গেলে, লাল বা বাদামী পিল খাওয়ার নিয়ম মেনে লাল বা বাদামী পিল গুলো খেতে হবে।

লাল পিল খেলে কি হয়। লাল পিল খাওয়ার নিয়ম।

আপনার অনেকেই জানতে চান, লাল পিল খেলে কি হয় এবং লাল পিল খাওয়ার নিয়ম। যেদিন আপনার সাদা পিল শেষ হয়ে যাবে, তার পরদিন থেকে একই সময়ে লাল বা বাদামী পিল গুলো খাবেন। লাল বা বাদামী পিল গুলোতে আয়রন ট্যাবলেট থাকে। এগুলো খেলে মেয়েদের মাসিকের বিভিন্ন সমস্যা কম হয়। যেমন রক্তপাত কম হওয়া ব্যাথা কম হওয়া ইত্যাদি। এছাড়া মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার উপায় হিসেবে এগুলো কাজ করে।

অনেকে জানতে চান কোন পিল খেলে মাসিক হবে। লাল পিল গুলো খাওয়ার সময় সম্ভবত আপনার মাসিক হবে। মাসিক হোক বা না হোক, লাল পিল গুলো খাওয়া শেষ হলে, পর দিন থেকে আবার নতুন প্যাকেটের সাদা পিল দিয়ে শুরু করুন। তবে, মাসিক না হলে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনি গর্ভবতী নন।

এভাবে আপনি যত দিন বাচ্চা নিতে না চান, তত দিন পিল চালিয়ে যেতে হবে। বাচ্চা নিতে চাইলে পিল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। পিল খাওয়া বন্ধ করার পর আপনি স্বাভাবিক ভাবে গর্ভবতী হতে পারবেন।

আপনি যে পিলটি খাবেন, সেটির প্যাকেটের মধ্যে নির্দেশনা পত্রে লেখা আছে, কিভাবে পিল খেতে হয়। নির্দেশনা পত্রটি দেখে পিল খাওয়া শুরু করতে পারেন।

পিল খেতে ভুলে গেলে করনীয়

স্বল্পমাত্রার জন্মবিরতিকরণ পিল গুলো নিয়মিত খেতে হয়। যদি, আপনি কোন কারনে একদিন একটি পিল খেতে ভুলে যান। তাহলে, পরদিন ভুলে যাওয়া পিলটি যখন মনে পড়বে, তখন খেয়ে নিবেন এবং ওই দিনের পিলটিও নির্দিষ্ট সময়ে খাবেন।

কিন্তু, আপনি যদি পরপর দুইদিন দুটি বা তার বেশি পিল খেতে ভুলে যান। তাহলে, যেদিন মনে পড়বে সেদিন ভুলে যাওয়া একটি পিল খাবেন এবং ওই দিনের নির্দিষ্ট পিলটি খাবেন। তারপরও, এতে কিছু জটিল হিসেব-নিকেশ থেকে যায়। তাই, নিরাপদ সহবাসের জন্য, পিল খেতে ভুলে যাওয়ার পরবর্তী সাতদিন, যৌন মিলনে ভালো মানের কনডম ব্যবহার করুন।

কারণ, দুই বা তার বেশি দিন পিল খেতে ভুলে গেলে, ওই সময়ে সহবাসে বীর্য স্ত্রীর যোনীতে গেলে গর্ভধারণ হতে পারে। তাই, পরামর্শ থাকবে ঐ সময়ে কনডম ব্যবহারের সঠিক নিয়ম গুলো জেনে কনডম ব্যবহার করুন ও নিরাপদ থাকুন।

আপনারা যারা নিয়মিত স্বল্পমাত্রার পিল খান, তারা পিল খেতে যেন ভুলে না যান, সেজন্য পিল রিমাইন্ডার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। Google Play Store এ খুঁজলে পিল রিমাইন্ডার অ্যাপ পাবেন।

পিল খাওয়ার উপকারিতা

পিল খাওয়ার উপকারিতা

ভালো মানের স্বল্প মাত্র পিল খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এজন্য, চিকিৎসকরা আজকাল অবিবাহিত মেয়েদেরকে পিল প্রেসক্রাইব করেন। পিল খাওয়ার উপকারিতা গুলো হলোঃ

 ১। যে কয় বছর সন্তান নিতে না চান, নিয়মিত পিল খেলে, সেই কয় বছর কার্যকর ভাবে গর্ভধারণ রোধ করে।

২। যে সকল মেয়েদের অনিয়মিত পিরিয়ড হয়, পিল খেলে তাদের নিয়মিত পিরিয়ড হতে সাহায্য করে।

৩। নিয়মিত স্বল্প মাত্রার পিল খেলে, মেয়েদের মাসিকের নানা সমস্যা যেমন অতিরিক্ত রক্তপাত, ব্রেস্টে ব্যথা, জড়ায়ুতে ব্যথা ও মেজাজ খিটখিটে হওয়ার সমস্যা দূর হয়।

৪। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানিদের মতে, নিয়মিত স্বল্পমাত্রার পিল খেলে জরায়ুর ক্যানসার ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।

৫। নিয়মিত পিল খেলে ব্রেস্টের কিছু রোগ ও তলপেটের প্রদাহ প্রতিরোধ করা যায়।

৬। যাদের ব্রনের সমস্যা রয়ছে, তাদের ব্রন দূর করার উপায় হিসেবে পিল খেলে ব্রন কমে।

পিল খাওয়ার অপকারিতা

পিল খেলে কি ক্ষতি হয় বা পিল খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি, এ বিষয়ে অনেকেই জানতে চান। বর্তমানে, বাজারে যে সকল ভালো মানের পিল পাওয়া যায়, সেগুলোর তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নাই। শুধুমাত্র, যদি পিল আপনার শরীরে না মানায় তাহলে প্রথম দিকে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেগুলো হলোঃ

১। পিল খাওয়ার প্রথম কয়দিন আপনার মেজাজ খিটখিটে লাগতে পারে।

২। পিল খেলে, প্রথম দিকে মাথাব্যথা করতে পারে। ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন এবং চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন।

৩। পিল খাওয়ার প্রথম দিকে বমি ভাব হতে পারে। এছাড়া, তলপেটে ও বেস্টে ব্যথা হতে পারে।

 ৪। পিল খেলে, প্রথম দিকে পিরিয়ড ছাড়া ব্লিডিং হতে পারে। এছাড়া, মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

৫। এছাড়া, পিল খেলে মেয়েদের যৌন মিলনের আগ্রহ কমে যেতে পারে।

আপনার শরীরে যদি পিল টি না মানায় বা পিল খাওয়ার প্রথম দিকে উপরোক্ত অসুবিধা গুলো হতে পারে। কিন্তু, দীর্ঘ দিন এই সমস্যা গুলো হলে, পিল পরিবর্তন করে খেতে পারেন।

আমাদের শেষ কথা

আজকে আমরা আপনাদের জানালাম, কোন পিল সবচেয়ে ভালো, পিল খাওয়ার নিয়ম, পিল খেতে ভুলে গেলে করণীয়। এছাড়া, ইমারজেন্সি পিল (Emergency Pill) কি, লাল পিল খেলে কি হয়, লাল পিল খাওয়ার নিয়ম, পিল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। আশা করি বিষয় গুলো সম্পর্কে আপনারা সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছে। তারপরও এ বিষয়ে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আমরা এই আর্টিকেলে শুধু মাত্র পিল বিষয়ে আপনাদের কিছু সঠিক ধারণা দিয়েছি। কোন ভাবেই এটিকে চিকিৎসা পত্র হিসেবে গ্রহণ করবেন না। আমরা পূর্বেও উল্লেখ করেছি পিল খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আপনার জন্য উপযুক্ত পিল টি খাবেন।

কারন শরীরে কিছু জটিলতা (যেমনঃ ডায়াবেটিস) থাকলে তারা পিল খেতে পারবেন না৷ তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বা আপনার নিকটস্থ পরিবার পরিকল্পনা অফিসের চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য কর্মীর পরামর্শে পিল খাওয়া শুরু করুন।

FAQ

প্রশ্নঃ ১। পিল খাওয়ার কত দিন পর সহবাস করা যায়?

উত্তরঃ পিল খাওয়ার তিনদিন পর থেকে অরক্ষিত সহবাস করা যায়। তবে, গর্ভধারণ হতে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকার জন্য, প্রথম পিল খাওয়ার সাতদিন পর্যন্ত কনডম ব্যবহার করা ভালো।

প্রশ্নঃ ২। মাসিকের সময় পিল খেলে কি হয়?

উত্তরঃ মাসিকের সময় পিল খেলে মাসিকের বা পিরিয়ডের নানা সমস্যা কম হয়। বিশেষ করে, ভালো মানের ২৮ টি পিলে থাকা লাল বা বাদামি আয়রন পিল গুলো পিরিয়ডের জটিলতা কমায়। এবং নিয়মিত পিরিয়ড হতে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ ৩। অবিবাহিত মেয়েরা পিল খেলে কি হয়?

উত্তরঃ অবিবাহিত মেয়েরা নিয়মিত পিল খেলে, পিরিয়ডের নানা জটিলতা দূর হয়। যেমন, তলপেটে ব্যথা, ব্রেস্টে ব্যথা ও অতিরিক্ত ব্লিডিং বন্ধ হওয়া। এছাড়া, অবিবাহিত মেয়েরা পিল খেলে অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url